রোগ প্রতিরোধে নামাজের ভুমিকা
মোহাম্মাদ মাহবুবুল আলম ফারুকী
সহকারী শিক্ষক (ইসলাম শিক্ষা)
কাজাইকাটা উচ্চ বিদ্যালয়।
মানুষের শরীর যেন এক জটিল কারখানা। যেমন তার গঠন তেমন তার অঙ্গ প্রতঙ্গের কাজ করার ক্ষমতা। গোটা মানব দেহ ৩৬০টি জোড়া সন্ধিতে সংযুক্ত এবং প্রতিটি জোড়া সন্ধির নিয়মিত নড়াচড়া অপরিহার্য। দেহের সকল অঙ্গ প্রতঙ্গের কাজ করার ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য রীতিবদ্ধ শরীরচর্চা (systematic physical exercise) মানুষের জন্য বাধ্যতামূলক বিষয়। স্বাস্থ রক্ষায় বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ থেকে পরিষ্কার উপলব্ধি করা যায় যে নিয়মিত শরীরচর্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।
শরীরচর্চার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো নামাজ। এটা যেমন মুসলমানদের ধর্মীয় বিধান। অন্যদিকে মানব শরীরের জন্য ব্যয়াম বা physical exercise.
শরীর বিজ্ঞানীরা বলেছেন মুসলমানদের শারীরিক movement প্রক্রিয়ায় যে দৈনিক পাঁচবার নামায আদায় করে তা এক অসাধারণ বিজ্ঞানভিত্তিক শরীর অনুশীলন পদ্ধতি। যার ফলে একটি সক্ষম দেহ গড়ে উঠে। সক্ষম দেহ গড়ে তোলার জন্য আরো প্রয়োজন সুষ্ঠু রক্ত সঞ্চালন। অক্সিজেন প্রবাহ এবং বিপাক। পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষন থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে নিয়মিত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে দেহের রক্ত সঞ্চালন, অক্সিজেন প্রবাহ এবং বিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক ও সক্রিয় থাকে। যার ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। নামাজ আদায়ে কিছু শারীরিক পদ্ধতির বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।
ক্বিয়ামঃ স্থিরভাবে দাড়িয়ে নামাজ আদায় করতে হয়। এর নাম ক্বিয়াম। ক্বিরাতের মাধ্যমে মস্তিষ্ক speech centre সক্রিয় থাকে। চোখ দুটি সেজদার স্থান বরাবর নিবদ্ধ থাকে। ক্বিয়াম অবস্থায় earth gravit এর টানে বেশীর ভাগ রক্ত পায়ের দিকে নেমে আসে। venus retum বিলম্বিত হয়। ক্ষণিকের জন্য হৃদয় স্পন্দন বেড়ে যায় এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে বিপাক ক্রিয়া দ্রুত ঘটে।
রুকুঃ রুকু করার সময় হাত দুটি সন্ধির উপর আঙ্গুল ছড়িয়ে রাখতে হয়। পিঠ আর মাথা ভূমির সাথে সমান্তরাল থাকে। এ অবস্থায় ৩৩টি কশেরুকা প্রভাবিত হয়। এদের মধ্যে ঘাড়ের কাছে ৭টি পব cervical বুকের কাছে ১২টি thorasic কোমরের কাছে ৫টি lumbox ও ৫টি
secral এবং একদম শেষে ৪টি হাড় মিশে একটি coccygeal নিয়মিত রুকু করার ফলে হাড়ে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে।
সেজদাঃ সেজদার সময় সাতটি অঙ্গ ক্রমান্বয়ে মাটিতে রাখতে হয়। এ সময় ৩৬০টি জোড়া ও ২০৬টি হাড় সমানে প্রভাবিত হয়। এবং মস্তিষ্কের অতি সুক্ষ কৌশিক জালিকায় রক্ত প্রভাবিত হয়। শরীরের সর্বত্র রক্ত প্রবাহিত হওয়াও সুস্থ্য দেহের পূর্বশর্ত।
বৈঠকঃ বৈঠকের সময় ডান পা খাড়া রেখে বাম পা বিছিয়ে দিয়ে বসতে হয়। ডান পায়ের আঙ্গুল গুলি পশ্চিমদিকে বক্র করে রাখা হয়। হাত দুটি উরুর উপর ও দৃষ্টি থাকে কোলের দিকে। কিয়ামের ফলে যে শক্তি ব্যয় হয় তা বৈঠকের সময় অক্সিজেনের সাহায্যে বেশী গুকোজ দহন করে শক্তি উৎপাদন করে। তখন বাড়তি অপ্রিজন জোগানোর জন্য আর অক্সিজেন নিতে না পারে তখন শুরু হয় অবাত শ্বসন। সবাত শ্বসনের সময় পদ্ধতিতে গ্লুকোজ পাইরুভিক এসিড তৈরী হয়। অক্সিজেনের সাহায্যে এই এসিড বিপাক হয়ে পানি (H2O) আর কার্বন ডাই অভ্রইড (CO2) তৈরী করে।
যা মানুষের শারীরিক সুস্থতা আনয়ন করে এবং তার পাশাপাশি মহান আল্লাহর হুকুমও পালন করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ফারুকী
©️দৈনিক নতুন কলম দ্বারা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত