২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায় ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষার জন্য একাধিক পণ্যের ওপর শুল্ক, ভ্যাট ও কর বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার। এর ফলে ভোক্তাদের জন্য বেশ কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন। এতে যেসব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
📌 দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের
🔸 সিগারেট: সিগারেট তৈরিতে ব্যবহৃত কাগজের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৬০% থেকে বাড়িয়ে ১০০% করার প্রস্তাব রয়েছে। ফলে সিগারেটের দাম বাড়বে।
🔸 মোবাইল ফোন: দেশীয় উৎপাদিত মোবাইল ফোনের ওপর উৎপাদন পর্যায়ে ২% থেকে ২.৫% পর্যন্ত ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব থাকায় দাম বাড়তে পারে।
🔸 ফ্রিজ ও এসি: বর্তমানে ভ্যাট ৭.৫% থেকে বাড়িয়ে ১৫% করার প্রস্তাব। এতে এসব ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম বাড়বে।
🔸 ব্যাটারিচালিত রিকশা: ১২০০ ওয়াট ডিসি মোটরে শুল্ক ১% → ১৫%। ফলে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এসব রিকশার দাম বাড়বে।
🔸 মোটরসাইকেল ও সাইকেলের যন্ত্রাংশ: নতুন করে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব থাকায় খুচরা যন্ত্রাংশের দাম বাড়তে পারে।
🔸 রড ও স্টিল: ভ্যাট ২০% থেকে বাড়িয়ে ২৩% এবং ফিক্সড আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব থাকায় প্রতি টনে রডের দাম প্রায় ১৪০০ টাকা বাড়তে পারে।
🔸 কসমেটিক্স: লিপস্টিক, ফেসওয়াশ, আইলাইনার ইত্যাদির ন্যূনতম আমদানি মূল্য দ্বিগুণ করার প্রস্তাব; ফলে দাম বাড়বে।
🔸 ব্লেড: ব্লেড তৈরির স্টেইনলেস স্টিল স্ট্রিপের ওপর ভ্যাট ৫% → ৭%। দাম বাড়বে।
🔸 প্লাস্টিক সামগ্রী: টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার ও টয়লেটসামগ্রীর ওপর ভ্যাট ৭.৫% → ১৫%।
🔸 একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক: কাপ, প্লেট, বাটি ইত্যাদিতে দ্বিগুণ ভ্যাটের প্রস্তাব।
🔸 সুতা (ইয়ার্ন): কটন ও ম্যান-মেইড ফাইবারের ওপর নির্ধারিত কর ৩ টাকা → ৫ টাকা প্রতি কেজি। গামছা, লুঙ্গি ও পোশাকের দাম বাড়বে।
🔸 হেলিকপ্টার: আমদানিতে ১০% শুল্ক আরোপের প্রস্তাব। বর্তমানে শুল্ক নেই।
🔸 বিদেশি চকলেট: ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য ৪ ডলার → ১০ ডলার। দাম বাড়বে।
🔸 বিদেশি খেলনা: ট্যারিফ মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব থাকায় দাম বাড়বে।
🔸 অন্যান্য পণ্য: তারকাঁটা, নাট-বোল্ট, স্ক্রু, বৈদ্যুতিক হার্ডওয়্যার, দরজার তালা, তামাক বীজ প্রভৃতির দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মত, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ ও দেশীয় শিল্প রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সাধারণ ভোক্তাদের ওপর এর প্রভাব পড়বে উল্লেখযোগ্যভাবে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির ব্যয় বাড়তে পারে।