রৌমারী - কুড়িগ্রাম ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যশোরের মণিরামপুরে দুই ঘন্টার কর্মবিরতিতে সেবা বন্ধে রোগীদের ক্ষোভ! ‎ নির্বাচনী প্রচারনা স্থগিতঃ ‎মণিরামপুরে বিভিন্ন স্থানে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া পিরোজপুর জেলা সরকারি চাকুরিজীবী কল্যাণ পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত,সভাপতি শামসুদ্দোহা- সম্পাদক সাদ্দাম চুয়াডাঙ্গার গয়েশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি ‘মাদককারবারী’ আহত: পরিবার বলছে নিহত, চলছে শোকের মাতম ‎মণিরামপুরে শিক্ষানীতি বহির্ভূত কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত প্রধান শিক্ষক মান্নান শোকজ!করছেন দৌড়ঝাঁপ রাজাপুরে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিটে দিনমজুর “ফজলুর” বসতঘর পুড়ে ছাই, খোলা আকাশের নিচে নিঃস্ব পরিবার!! চুয়াডাঙ্গা যৌথবাহিনীর অভিযানে তিনজন গ্রেফতার বোমা, দেশীয় অস্ত্র ও হরিণের চামড়া উদ্ধার। মণিরামপুরের দূর্বাডাঙ্গায় আট দলীয় ফাইনাল ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত গাজীপুরের সফিপুরে বাউল আবুল সরকারের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত।
সর্বশেষ সংবাদ :
যশোরের মণিরামপুরে দুই ঘন্টার কর্মবিরতিতে সেবা বন্ধে রোগীদের ক্ষোভ! ‎ নির্বাচনী প্রচারনা স্থগিতঃ ‎মণিরামপুরে বিভিন্ন স্থানে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া পিরোজপুর জেলা সরকারি চাকুরিজীবী কল্যাণ পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত,সভাপতি শামসুদ্দোহা- সম্পাদক সাদ্দাম চুয়াডাঙ্গার গয়েশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি ‘মাদককারবারী’ আহত: পরিবার বলছে নিহত, চলছে শোকের মাতম ‎মণিরামপুরে শিক্ষানীতি বহির্ভূত কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত প্রধান শিক্ষক মান্নান শোকজ!করছেন দৌড়ঝাঁপ রাজাপুরে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিটে দিনমজুর “ফজলুর” বসতঘর পুড়ে ছাই, খোলা আকাশের নিচে নিঃস্ব পরিবার!! চুয়াডাঙ্গা যৌথবাহিনীর অভিযানে তিনজন গ্রেফতার বোমা, দেশীয় অস্ত্র ও হরিণের চামড়া উদ্ধার। মণিরামপুরের দূর্বাডাঙ্গায় আট দলীয় ফাইনাল ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত গাজীপুরের সফিপুরে বাউল আবুল সরকারের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত।

ঘরভর্তি অন্ধকার, বিল দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায়!

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৫২:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
  • ৫৭ Time View

বিল রিডার মিন্টু সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক নতুন কলমঃ

‘চুরিতো চুরি, তার উপর সিনা চুরি’ — এমনই ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায়। জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রৌমারী জোনাল অফিসে বিদ্যুৎ বিল তৈরিতে বড় ধরনের জালিয়াতি ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, নিয়মবহির্ভূতভাবে ইউনিট সংখ্যা বাড়িয়ে, পুরনো বিল আবার দেখিয়ে এবং না গিয়ে অনুমানভিত্তিক বিল তৈরি করে একাধিক গ্রাহককে বেকায়দায় ফেলা হচ্ছে।

২৪ জুন, মঙ্গলবার বিকালে রৌমারী থানার অন্তর্গত বাগেরহাট বাজার এলাকায় কারেন্ট বিল বিতরণে যান পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মিটার রিডার মোঃ মিন্টু সরকার। গ্রাহকরা বিল হাতে পেয়ে চমকে ওঠেন। দেখা যায়, কারো কারো বিল ৫,০০০ টাকার উপরে চলে গেছে, যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি।

বাগেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী বাবুল আক্তার অভিযোগ করে বলেন, “আমার মিটারে আজ পর্যন্ত ১৫৭৮ ইউনিট দেখাচ্ছে, অথচ বিলের কাগজে লেখা হয়েছে ১৬৩০ ইউনিট। মে মাসে মাত্র ৩০ ইউনিট ব্যবহারের জন্যই ৬২০ টাকার বেশি বিল এসেছে। অথচ স্বাভাবিক হিসেবে তা ৩০০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। এর ওপর, আমি গত ২৪ মার্চে তৌকির হোসেনের মাধ্যমে ২৩৬৭ টাকা বিল পরিশোধ করেছি, সেই বিলও আবার নতুন করে দেখানো হয়েছে।”

বাজারের আরও অনেক ব্যবসায়ী জানান, প্রায় প্রতিটি মিটারে ৫০ থেকে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত বেশি দেখিয়ে বিল তৈরি করা হয়েছে। মিন্টু সরকার জানান, “গত দুই মাস অফিস থেকেই বিল তৈরি করা হয়েছে। কেউ মাঠে এসে মিটার রিডিং নেয়নি।”

এমনকি, কেউ কেউ দেখেছেন — যেখানে ৩৩৫ ইউনিট ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে বিল করা হয়েছে ৩৭৫ ইউনিটের। আবার ৩০ ইউনিট ব্যবহার দেখিয়ে বিল এসেছে ৬২০ টাকা, যেখানে তা হওয়া উচিত ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে।

একই এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী নুরুল হক জানান, “বিনা কারণে বেশি বিল দিয়ে আমরা অতিষ্ঠ। আমাদের জিজ্ঞেস না করেই অফিসে বসে যারা যা খুশি তাই লিখছে।”

এ ব্যাপারে মিন্টু সরকার বলেন, “তৌকির হোসেন নামের একজন ব্যক্তি প্রতারণা করে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। সেই বিলগুলো মুছেনি অফিস। যার ফলে গ্রাহকরা এক বিল দুইবার দিচ্ছে।”

অভিযোগ উঠেছে — কোনো দুর্যোগ না থাকা সত্ত্বেও প্রায় ১০ কিলোমিটার দূর থেকে ‘দূরদৃষ্টি’ দিয়ে বিল তৈরি করা হচ্ছে। মিন্টু সরকার নিজেও স্বীকার করেছেন, “হ্যাঁ, এটা অন্যায়।”

এর ওপর, বিদ্যুৎ বিভ্রাট যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। স্থানীয়দের অভিযোগ, “দিন-রাত মিলিয়ে ৬ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। এর মধ্যে আবার অতিরিক্ত বিল দিয়ে আমাদের নিঃশেষ করে দিচ্ছে।”

বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মঙ্গলবার মিন্টু সরকারকে কিছু সময়ের জন্য আটকিয়ে রাখেন। পরে চরশৌলমারী অফিস থেকে আরেক বিল রিডার তাকে উদ্ধারে আসেন। নাম-পরিচয় জানতে চাওয়া হলে তিনি পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রৌমারী জোনাল অফিসের ডিজিএম দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার সরাসরি ও মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী একটিই দাবি জানিয়েছেন—
১. অফিসে বসে অনুমানভিত্তিক বিল লেখা বন্ধ করতে হবে।
২. পুরনো বিলের সদুত্তর দিয়ে নতুন করে সঠিক বিল তৈরি করতে হবে।
৩. বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করতে হবে।
৪. অংশগ্রহণমূলক তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আলোচিত সংবাদ

যশোরের মণিরামপুরে দুই ঘন্টার কর্মবিরতিতে সেবা বন্ধে রোগীদের ক্ষোভ! ‎

ঘরভর্তি অন্ধকার, বিল দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায়!

Update Time : ১২:৫২:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, দৈনিক নতুন কলমঃ

‘চুরিতো চুরি, তার উপর সিনা চুরি’ — এমনই ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায়। জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রৌমারী জোনাল অফিসে বিদ্যুৎ বিল তৈরিতে বড় ধরনের জালিয়াতি ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, নিয়মবহির্ভূতভাবে ইউনিট সংখ্যা বাড়িয়ে, পুরনো বিল আবার দেখিয়ে এবং না গিয়ে অনুমানভিত্তিক বিল তৈরি করে একাধিক গ্রাহককে বেকায়দায় ফেলা হচ্ছে।

২৪ জুন, মঙ্গলবার বিকালে রৌমারী থানার অন্তর্গত বাগেরহাট বাজার এলাকায় কারেন্ট বিল বিতরণে যান পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মিটার রিডার মোঃ মিন্টু সরকার। গ্রাহকরা বিল হাতে পেয়ে চমকে ওঠেন। দেখা যায়, কারো কারো বিল ৫,০০০ টাকার উপরে চলে গেছে, যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি।

বাগেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী বাবুল আক্তার অভিযোগ করে বলেন, “আমার মিটারে আজ পর্যন্ত ১৫৭৮ ইউনিট দেখাচ্ছে, অথচ বিলের কাগজে লেখা হয়েছে ১৬৩০ ইউনিট। মে মাসে মাত্র ৩০ ইউনিট ব্যবহারের জন্যই ৬২০ টাকার বেশি বিল এসেছে। অথচ স্বাভাবিক হিসেবে তা ৩০০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। এর ওপর, আমি গত ২৪ মার্চে তৌকির হোসেনের মাধ্যমে ২৩৬৭ টাকা বিল পরিশোধ করেছি, সেই বিলও আবার নতুন করে দেখানো হয়েছে।”

বাজারের আরও অনেক ব্যবসায়ী জানান, প্রায় প্রতিটি মিটারে ৫০ থেকে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত বেশি দেখিয়ে বিল তৈরি করা হয়েছে। মিন্টু সরকার জানান, “গত দুই মাস অফিস থেকেই বিল তৈরি করা হয়েছে। কেউ মাঠে এসে মিটার রিডিং নেয়নি।”

এমনকি, কেউ কেউ দেখেছেন — যেখানে ৩৩৫ ইউনিট ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে বিল করা হয়েছে ৩৭৫ ইউনিটের। আবার ৩০ ইউনিট ব্যবহার দেখিয়ে বিল এসেছে ৬২০ টাকা, যেখানে তা হওয়া উচিত ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে।

একই এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী নুরুল হক জানান, “বিনা কারণে বেশি বিল দিয়ে আমরা অতিষ্ঠ। আমাদের জিজ্ঞেস না করেই অফিসে বসে যারা যা খুশি তাই লিখছে।”

এ ব্যাপারে মিন্টু সরকার বলেন, “তৌকির হোসেন নামের একজন ব্যক্তি প্রতারণা করে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। সেই বিলগুলো মুছেনি অফিস। যার ফলে গ্রাহকরা এক বিল দুইবার দিচ্ছে।”

অভিযোগ উঠেছে — কোনো দুর্যোগ না থাকা সত্ত্বেও প্রায় ১০ কিলোমিটার দূর থেকে ‘দূরদৃষ্টি’ দিয়ে বিল তৈরি করা হচ্ছে। মিন্টু সরকার নিজেও স্বীকার করেছেন, “হ্যাঁ, এটা অন্যায়।”

এর ওপর, বিদ্যুৎ বিভ্রাট যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। স্থানীয়দের অভিযোগ, “দিন-রাত মিলিয়ে ৬ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। এর মধ্যে আবার অতিরিক্ত বিল দিয়ে আমাদের নিঃশেষ করে দিচ্ছে।”

বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মঙ্গলবার মিন্টু সরকারকে কিছু সময়ের জন্য আটকিয়ে রাখেন। পরে চরশৌলমারী অফিস থেকে আরেক বিল রিডার তাকে উদ্ধারে আসেন। নাম-পরিচয় জানতে চাওয়া হলে তিনি পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রৌমারী জোনাল অফিসের ডিজিএম দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার সরাসরি ও মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী একটিই দাবি জানিয়েছেন—
১. অফিসে বসে অনুমানভিত্তিক বিল লেখা বন্ধ করতে হবে।
২. পুরনো বিলের সদুত্তর দিয়ে নতুন করে সঠিক বিল তৈরি করতে হবে।
৩. বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করতে হবে।
৪. অংশগ্রহণমূলক তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।