রৌমারী - কুড়িগ্রাম ০৬:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যশোরের মণিরামপুরে দুই ঘন্টার কর্মবিরতিতে সেবা বন্ধে রোগীদের ক্ষোভ! ‎ নির্বাচনী প্রচারনা স্থগিতঃ ‎মণিরামপুরে বিভিন্ন স্থানে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া পিরোজপুর জেলা সরকারি চাকুরিজীবী কল্যাণ পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত,সভাপতি শামসুদ্দোহা- সম্পাদক সাদ্দাম চুয়াডাঙ্গার গয়েশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি ‘মাদককারবারী’ আহত: পরিবার বলছে নিহত, চলছে শোকের মাতম ‎মণিরামপুরে শিক্ষানীতি বহির্ভূত কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত প্রধান শিক্ষক মান্নান শোকজ!করছেন দৌড়ঝাঁপ রাজাপুরে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিটে দিনমজুর “ফজলুর” বসতঘর পুড়ে ছাই, খোলা আকাশের নিচে নিঃস্ব পরিবার!! চুয়াডাঙ্গা যৌথবাহিনীর অভিযানে তিনজন গ্রেফতার বোমা, দেশীয় অস্ত্র ও হরিণের চামড়া উদ্ধার। মণিরামপুরের দূর্বাডাঙ্গায় আট দলীয় ফাইনাল ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত গাজীপুরের সফিপুরে বাউল আবুল সরকারের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত।
সর্বশেষ সংবাদ :
যশোরের মণিরামপুরে দুই ঘন্টার কর্মবিরতিতে সেবা বন্ধে রোগীদের ক্ষোভ! ‎ নির্বাচনী প্রচারনা স্থগিতঃ ‎মণিরামপুরে বিভিন্ন স্থানে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া পিরোজপুর জেলা সরকারি চাকুরিজীবী কল্যাণ পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত,সভাপতি শামসুদ্দোহা- সম্পাদক সাদ্দাম চুয়াডাঙ্গার গয়েশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি ‘মাদককারবারী’ আহত: পরিবার বলছে নিহত, চলছে শোকের মাতম ‎মণিরামপুরে শিক্ষানীতি বহির্ভূত কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত প্রধান শিক্ষক মান্নান শোকজ!করছেন দৌড়ঝাঁপ রাজাপুরে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিটে দিনমজুর “ফজলুর” বসতঘর পুড়ে ছাই, খোলা আকাশের নিচে নিঃস্ব পরিবার!! চুয়াডাঙ্গা যৌথবাহিনীর অভিযানে তিনজন গ্রেফতার বোমা, দেশীয় অস্ত্র ও হরিণের চামড়া উদ্ধার। মণিরামপুরের দূর্বাডাঙ্গায় আট দলীয় ফাইনাল ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত গাজীপুরের সফিপুরে বাউল আবুল সরকারের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত।

পুরান ঢাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা: সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে লাশের ওপর লাফানোর বিভৎসতা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:১৫:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
  • ৪৯ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক | দৈনিক নতুন কলম

ঢাকার ঐতিহাসিক মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের পাশে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে। হত্যার বিভৎস চিত্র ধরা পড়ে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজে—যেখানে দেখা গেছে, মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশের ওপর লাফাচ্ছে একাধিক যুবক।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা। মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে মানুষের জটলা। এরই মাঝে সোহাগের রক্তাক্ত, প্রায় বস্ত্রহীন দেহকে হাসপাতালের ভেতর থেকে টেনে বের করে আনে দুই তরুণ। একজন খালি গায়ে, কালো প্যান্ট পরে—গালে চড় মারছে সোহাগকে। এরপর একে একে আরও কয়েকজন এসে লাফাচ্ছে তার বুকের ওপর। একপর্যায়ে তার মাথায়ও লাথি মারা হয়।

ভয়ানক এই দৃশ্য চলছিল ব্যস্ত সড়কের পাশে, অসংখ্য মানুষের সামনে। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি তাকে বাঁচাতে।

নিহতের স্ত্রী লাকী বেগম জানান, স্থানীয় মহিনসহ কয়েকজন তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আশপাশে লোক থাকলেও কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। সোহাগের গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়। বর্তমানে তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকায় বসবাস করতেন।

সোহাগের ভাগ্নি সাদিয়া আক্তার জানান, তিনি একসময় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। চার-পাঁচ বছর আগে ‘সোহানা মেটাল’ নামে নিজের ভাঙারি ব্যবসা শুরু করেন সোহাগ। সচ্ছল জীবনের দিকে এগোচ্ছিলেন তিনি। অভিযুক্ত মহিন তার বন্ধুস্থানীয় ছিলেন এবং মাঝেমধ্যে বাসায়ও আসতেন।

সম্প্রতি মহিন ব্যবসার অর্ধেক অংশ দাবি করেন এবং সোহাগ রাজি না হওয়ায় হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। হত্যার আগের দিন সোহাগের গুদামে গুলি চালানো হয়। বুধবার দুপুরে “মীমাংসা”র কথা বলে ডেকে নেয়া হয় তাকে। এরপরই ঘটে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, মহিন ও তার সহযোগীরা প্রথমে সোহাগকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে যান। সোহাগ বাঁচার চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। মাথা থেঁতলে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর মহিনদের হাতে এলাকার ভাঙারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া হয়। তবে কিছুদিন পর তারা পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। সোহাগ রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় মিটফোর্ড থানায় এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা গেছে। নিহতের পরিবার আইনগত সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছেন।

সোহাগের স্ত্রী লাকী বেগম প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

সোহাগের শিশু সন্তানদের ভবিষ্যৎ আজ অনিশ্চিত। পুরান ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে প্রকাশ্যে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেশের আইনশৃঙ্খলার ওপর বড় প্রশ্নচিহ্ন রেখে যাচ্ছে।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আলোচিত সংবাদ

যশোরের মণিরামপুরে দুই ঘন্টার কর্মবিরতিতে সেবা বন্ধে রোগীদের ক্ষোভ! ‎

পুরান ঢাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা: সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে লাশের ওপর লাফানোর বিভৎসতা

Update Time : ০৩:১৫:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক | দৈনিক নতুন কলম

ঢাকার ঐতিহাসিক মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের পাশে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে। হত্যার বিভৎস চিত্র ধরা পড়ে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজে—যেখানে দেখা গেছে, মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশের ওপর লাফাচ্ছে একাধিক যুবক।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা। মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে মানুষের জটলা। এরই মাঝে সোহাগের রক্তাক্ত, প্রায় বস্ত্রহীন দেহকে হাসপাতালের ভেতর থেকে টেনে বের করে আনে দুই তরুণ। একজন খালি গায়ে, কালো প্যান্ট পরে—গালে চড় মারছে সোহাগকে। এরপর একে একে আরও কয়েকজন এসে লাফাচ্ছে তার বুকের ওপর। একপর্যায়ে তার মাথায়ও লাথি মারা হয়।

ভয়ানক এই দৃশ্য চলছিল ব্যস্ত সড়কের পাশে, অসংখ্য মানুষের সামনে। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি তাকে বাঁচাতে।

নিহতের স্ত্রী লাকী বেগম জানান, স্থানীয় মহিনসহ কয়েকজন তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আশপাশে লোক থাকলেও কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। সোহাগের গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়। বর্তমানে তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকায় বসবাস করতেন।

সোহাগের ভাগ্নি সাদিয়া আক্তার জানান, তিনি একসময় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। চার-পাঁচ বছর আগে ‘সোহানা মেটাল’ নামে নিজের ভাঙারি ব্যবসা শুরু করেন সোহাগ। সচ্ছল জীবনের দিকে এগোচ্ছিলেন তিনি। অভিযুক্ত মহিন তার বন্ধুস্থানীয় ছিলেন এবং মাঝেমধ্যে বাসায়ও আসতেন।

সম্প্রতি মহিন ব্যবসার অর্ধেক অংশ দাবি করেন এবং সোহাগ রাজি না হওয়ায় হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। হত্যার আগের দিন সোহাগের গুদামে গুলি চালানো হয়। বুধবার দুপুরে “মীমাংসা”র কথা বলে ডেকে নেয়া হয় তাকে। এরপরই ঘটে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, মহিন ও তার সহযোগীরা প্রথমে সোহাগকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে যান। সোহাগ বাঁচার চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। মাথা থেঁতলে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর মহিনদের হাতে এলাকার ভাঙারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া হয়। তবে কিছুদিন পর তারা পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। সোহাগ রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় মিটফোর্ড থানায় এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা গেছে। নিহতের পরিবার আইনগত সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছেন।

সোহাগের স্ত্রী লাকী বেগম প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

সোহাগের শিশু সন্তানদের ভবিষ্যৎ আজ অনিশ্চিত। পুরান ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে প্রকাশ্যে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেশের আইনশৃঙ্খলার ওপর বড় প্রশ্নচিহ্ন রেখে যাচ্ছে।