বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করা ছোট্ট আরিয়ান – জীবন যুদ্ধের করুণ পরিণতি – দৈনিক নতুন কলম

বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করা ছোট্ট আরিয়ান – জীবন যুদ্ধের করুণ পরিণতি

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: জুলাই ২৩, ২০২৫

🔥 বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করা ছোট্ট আরিয়ান – জীবন যুদ্ধের করুণ পরিণতি

মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ফারুকী। 

সহকারী শিক্ষক (ধর্ম) 

কাজাইকাটা উচ্চ বিদ্যালয়।

 

বিমান দুর্ঘটনার পর যখন চারদিকে ধোঁয়া, আগুন আর চিৎকারে ভরে গিয়েছিল আকাশ-বাতাস, তখন সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই এক ছোট্ট শিশুকে দেখা গিয়েছিল পোড়া শরীর নিয়ে দৌঁড়াতে।
সে ছিল মাত্র ৭ বছরের ছোট্ট শিশু, নাম তার আরিয়ান।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেলেও সে বাঁচার জন্য চেষ্টা করছিল। তার চোখেমুখে ছিল অসীম ভয় আর ব্যথা, কিন্তু সেই সঙ্গে ছিল বেঁচে থাকার এক অসম সাহস।
বিস্ফোরণের পর, সে কাঁদতে কাঁদতে খুঁজছিল—
“আম্মু কোথায়?”
“আব্বু কই?”

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর আরিয়ান নিজের পোড়া শরীর নিয়েই বারবার ডেকে উঠছিল তার মা-বাবার নাম। সে জানতো না, তার ফুসফুসের ভেতরে আগুন ঢুকে গেছে, সে জানতো না, শরীরের চামড়া খুলে গিয়ে কোথাও কোথাও হাড় পর্যন্ত বেরিয়ে গেছে।
তবুও সে দৌঁড়েছে, কান্না করেছে, মায়ের হাত ধরার শেষ চেষ্টাটা করেছে…

🏥 চিকিৎসা ও মৃত্যু:

দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ডাক্তাররা জানান, আরিয়ানের ফুসফুসের ৭০% পুড়ে গিয়েছিল। আগুনের ধোঁয়া ও উচ্চ তাপ শরীরের ভেতরেও ভয়াবহ ক্ষতি করেছে।
তিনবার তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। কিন্তু ছোট্ট দেহটা আর এই যুদ্ধ সহ্য করতে পারেনি।

অবশেষে ২৩ জুলাই রাতে, নিঃশব্দে থেমে যায় আরিয়ানের হৃদস্পন্দন।
তার পরিবার নিশ্চিত করেছে—আরিয়ান আর আমাদের মাঝে নেই।

🏡 গ্রামের বাড়ি ও পরিচয়:

আরিয়ানের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায়।
তার বাবা-মা একটি পারিবারিক সফরের অংশ হিসেবে বিমানে ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় পুরো পরিবারই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়।

পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তবে এই শিশুটি—যে সবার আগে সাহস করে ছুটেছিল—সে আর ফিরলো না।

💔 দেশজুড়ে শোক:

এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর লাখো মানুষ আরিয়ানের জন্য প্রার্থনা করছিল।
“বাঁচুক এই শিশুটি”—এই প্রার্থনায় মুখর ছিল ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউবসহ নানা প্ল্যাটফর্ম।

তবে সেই আশায় ছেদ পড়েছে।

আজ তার জন্য কেবল দোয়া আর চোখের পানি রেখে গেলো এই ঘটনা।

🕊️ শেষ কথা:

হে আল্লাহ,
এই নিষ্পাপ শিশুটিকে আপনার প্রিয় বান্দাদের কাতারে স্থান দিন।
তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ স্থানে স্থান দিন।
তার পরিবারকে এই শোক সহ্য করার শক্তি দিন। আমিন।