বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো: নেছারাবাদে প্রধান শিক্ষিকা সাময়িক বরখাস্ত – দৈনিক নতুন কলম

বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো: নেছারাবাদে প্রধান শিক্ষিকা সাময়িক বরখাস্ত

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ৪, ২০২৫

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি:

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ।

জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোর ঘটনায় শুরু হয় বিতর্ক। বিষয়টি নিয়ে উভয়মুখী প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর সোমবার (৪ আগস্ট) বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিন বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো কোনো অপরাধ নয়। বরং এটি ছিল জাতির প্রতি আমার শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার কন্যা, বঙ্গবন্ধুর ছবি লাগানোকে গর্বের বিষয় মনে করি।”

তবে স্থানীয়ভাবে এই ঘটনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এটিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক প্রভাব বলেও আখ্যায়িত করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। শিক্ষকদের একটি অংশ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও অন্য একটি অংশ প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার স্বামী মো. হাফিজুর রহমান জানান, “সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ফোন করে বলেন, ‘আপনার জন্য একটি চিঠি আছে, অফিসে এসে নিয়ে যান।’ কিন্তু বরখাস্তের বিষয়ে কিছুই বলেননি।”

এদিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনার পর বিদ্যালয়ে তদন্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত চলমান আছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং স্থায়ী বহিষ্কারও হতে পারে।”

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুরুতে শিক্ষিকা ছবিটি না সরানোর ঘোষণায় অনড় থাকলেও পরে চাপে পড়ে সেটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হন। এর পরপরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত আসে।